বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৩

এতো নয় গান, এ নয় কান্না, এ যে আমার নীরব অভিমান

জীবনের মান স্রেফ যখন শুধুমাত্র গণনায় মুল্যায়িত। লাশের সংখ্যা কতো? কেউ একজন বলল ১৩০। আরেকজন বলল না,১৫০। পাশ থেকে আরেকজন বলল ওই একই কথা। ২০ টা হিসাবের হেরফের তো খুব বড় কিছু না। অবাক লাগে। মৃত্যু আমাদের দেশে সবচেয়ে সহজলভ্য প্রাপ্তি। একেকটা প্রাণের মৃত্যুর বিভীষিকা আজ আঙুলের কড়া গুনে "গভীর শোক প্রকাশ", "লজ্জিত জাতি" এসব ভ্রান্তির ছলনাময় সান্তনার বানীতে বিপন্ন।

এই মানুষটির উপার্জনে গোটা একটা পরিবারের ভবিষ্যৎ নিরভর করে, নিমেষে সে শামিল হয় মৃত্যু মিছিলে। কখনো আগুনে পুড়ে, কখনো জলে ডুবে আবার কখনোবা ভবন ধ্বসে। ঝরে যাওয়া জীবনের দাম হয়তো কখনো মেলে তথাকথিত অনুদানে। আর কতদিন! মৃত্যু অমোঘ সত্যি। তবে আমাদের দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এমন যে মৃত্যুকে আয়োজন করে নিয়ে আসা হয়। মৃত্যু তার স্বেচ্ছাচারিতায় বেঁছে নেয় হাজারো প্রাণ। বিশেষকরে শ্রেণীহীন মানুষের প্রাণের প্রতিই বেশী লোভাতুর দৃষ্টি মৃত্যুর।

স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা আমাদের দেশে অনিশ্চিত। এই দায় কার!!!কে এই নিশ্চয়তা দেবে আর কোনো তাজরিন গার্মেন্টস এ ঘটবে না অগ্নিকান্ড , ঝলসানো তৃপ্তির উন্মাদনায় মৃত্যু গ্রাস করবে না একটিও প্রাণ। আর কোনো রানা প্লাজা ধ্বসবেনা । আর কোনো তাজা প্রাণ মুহূর্তে শামিল হবে না লাশের মিছিলে।

"প্রতিটা জীবনকে বাঁচতে দিতে হবে, আর কোনো সকাল শুরু হবে না মৃত্যু-যন্ত্রণার আর্তনাদে"। এই স্বপ্ন হয়তো বিলাসিতা!

সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০১৩

বিতর্কে নোংরামি ও কিছু কথা

বিতার্কিকদের মুক্তচিন্তা আর আশাবাদী মানসিকতা বাঞ্ছনীয়।তবে সবচেয়ে মুখ্য হচ্ছে যৌক্তিকতা। "আমরা বাংলা মায়ের উদর জাত সন্তান" কথাটি যেকোনো মানুষ দ্বিধাহীন মেনে নেবে। কেউ যদি প্রশ্ন করে একজন মানুষ কিভাবে একটা দেশের উদরজাত হয়, তবে বাইওলজিকাল্লি তার কথা ১০০% সত্যি। তবে প্রজ্ঞা আর জ্ঞানের প্রশ্নে সেটা শতভাগই মূর্খতা।
একটি বিভাগীয় বিতর্ক ক্লাবকে আমাদের ঔরসজাত বলেছিলাম বলে একজন অবিতার্কিক সেটা নিয়ে উপরে বর্ণিত সংশয় তুলে ধরেছে। উল্লেখ্য তিনি ওই বিভাগীয় বিতর্ক ক্লাবটির কেউ নন। এবং বিতর্ক অঙ্গনে তার একমাত্র স্বীকৃতি একটা পোস্ট( সেটাও নাম-মাত্র)।ঔরসজাত কেন বলেছি সেটা আমার স্টেটমেন্ট এর চেয়ে ওই বিভাগীয় ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতাদের কৃতজ্ঞ স্বীকারোক্তিই বেশী গ্রহণযোগ্য। নির্দ্বিধায় তারা জেইউডিও এর অকুণ্ঠ সহযোগিতার কথা অবলীলায় মেনে নেয়।

যিনি নেতিবাচক কমেন্টটি করেছেন তার ব্যাথাটা আসলে অন্য জায়গায়।তারা নিজেদের কেন্দ্রীয় সংগঠন হিসেবে দাবি করেন( অবশ্য তাদের কাছে কেন্দ্রের অবস্থানটা মানে নয়, বয়সে)।তাছাড়া ফার্স্ট ইয়ারএর কিছু ছেলে মেয়ে যদি নতুন করে আরেকটা বিতর্কের ক্লাব খলে আর নাম দেয় জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং ক্লাব আর নিজেরা সেখানকার কিছু পোস্ট ভাগ করে নিয়ে নিজেদের কেন্দ্রীয় মানের বলে দাবি করে তবে ক্লাবের বয়স একটু বারলে সেও ওই নেতিবাচক কমেন্তকারির মতো গর্ব নিয়ে কিছু পোস্ট দিতে পারবেন। তাদের কাছে ক্লাবের বিতর্কের মান মুখ্য নয়,পোস্ট আর বয়সটাই মুখ্য।

ব্যাথার প্রশ্নে আসি। জেইউডিও এর এক সহযোগী সংগঠন কয়েকদিন আগে একটা সাফল্যমণ্ডিত কীর্তি অর্জন করেছে। বলা বাহুল্য জেইউডিও এখন আর ক্লাব পর্যায়ের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সরাসরি অংশগ্রহণ না করে এর বিভাগীয় ও হল পর্যায়ের ক্লাবগুলো কে প্রতিযোগিতায় পাঠায়। তবে ওই নেতিবাচক ব্যথিত ব্যাক্তি যেই স্বস্বীকৃত "কেন্দ্রীয়/ প্রধান" বিতর্ক ক্লাবটির সাবেক প্রতিনিধিত্বকারী, সেই ক্লাবটিও ওই একই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে।(অবশ্য মানের বিচারে তাদের কেন্দ্রীয়/ প্রধান সংগঠনকে আমাদের বিভাগীয়/ হল পর্যায়ের ক্লাবের সাথে তুলনা করলে আমাদেরই অসম্মান)

২/১ তা সাফল্য যেটা তাদের এসেছে, তাতে সাধুবাদ জানাই। তবে সেটাকে অহমিকার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াটা তাদের বিষয়। কুয়োর ব্যাঙ তার আপন পরিধিকেই পৃথিবী ভাবে। তাদের তথাকথিত "কেন্দ্রীয়/ প্রধান" ক্লাবের সাফল্যের চেয়ে আমাদের সহযোগী অনেক সংগঠনেরই সাফল্য বেশী। অযাচিত স্পর্ধায় পরিশীলিত একটা সংগঠনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য না করলে আমি কথাটা এভাবে বলতাম না।

কারণ, ওই ব্যাথিত ব্যাক্তির ক্লাবটি যখন ২/১ তা বিতর্ক শুরু করেছে, ক্যাম্পাসে বা বাইরে জেইউডিও এর বিতারকিকদের বিতর্কের মান আর সাংগঠনিক গ্রহণযোগ্যতা প্রায় সবই তারা দেখেছে। বিতার্কিক যুক্তি দিয়ে কথা বলবে, সত্যের চর্চা করবে, সাবলীল হবে সেটাই কাম্য। খালেদ হোসাইন স্যার এর একটা লাইন মনে পড়লো" কবির ব্রত আছে, তাকে বিব্রত করো না"। আমরা যুক্তির শিল্পী। আমাদের ব্রত আছে, মেধা আছে। আমাদের ব্রতকে বিব্রত করো না, আমাদের মেধা নিয়ে দ্বিধা করো না।

জেইউডিও বিতর্কের শৈল্পিক আন্দোলনের এক অন্যতম পথিকৃৎ। অসাম্প্রদায়িক চেতনার সাহসী সৈনিক।জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটির সুনাম রক্ষায় জেইউডিও নিরলস কাজ করে যাবে।বিতর্কের হঠকারী কোনো অপশক্তি আমাদের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করতে পারবে না।

বিতর্কের জয় হোক, জয় বাংলা।