সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৩

উপলব্ধি ৩

আমার জেইউডিও এর আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ট্রফির সংখ্যা গতকালের অর্জনের পর ৩০ হলো।যা হয়তো সাংখ্যিক মানে অন্যদের "২০০" বা "২৫০" থেকে অনেক কম। তবে গর্ব হয় এইভেবে যে, আমার জেইউডিও তে বিতর্কের শুদ্ধতার পাশাপাশি বিতারকিক সৃষ্টির ধারাবাহিকতা রয়েছে। আমার জেইউডিও তে যারা বিতর্ক করেছে, করে কিংবা করবে তারা প্রত্যেকেই ব্যাকরণ মেনে বিতর্ক করার চেষ্টা করে। আমার জেইউডিও এর মনন আমার শুধু অহংকারই নয় আমার স্পর্ধাও ।

হয়তো এ বছর আমাদের অর্জিত ট্রফির সংখ্যা মাত্র ২ যা গতবছর ৮ কিংবা তার আগের বছর ১০ ছিল। যেখানে অনেক বিতর্ক সংগঠনই এ বছর আমাদের চেয়ে বেশী ট্রফি অর্জন করেছে। আমাদের অহমিকার সবচেয়ে বড় জায়গা হচ্ছে আমরা রেডিমেট বিতার্কিকে বিশ্বাসী নই। আমাদের সফল বিতার্কিকরা সবাই রেডিমেট হোক আর না হোক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্ক প্র্যাকটিস করে, বিতর্ক শিখে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। আমরা সৃষ্টিতে বিশ্বাসী। তাই আমাদের বিশ্বাস প্র্যাকটিস ছাড়া , নতুন বিতার্কিক সৃষ্টির বদলে যারা রেডিমেট বিতারকিকদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পাঠিয়ে অর্জিত সাফল্যকে গর্ব মনে করে, জেইউডিও তাদের বিরুদ্ধে। কারণ,জেইউডিও নতুন বিতার্কিক সৃষ্টিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

এতে যদি আমাদের সাফল্যের পাল্লায় কিছু ট্রফি কমও আসে ক্ষতি নেই। আমার জেইউডিওতে ট্রফির চেয়ে ভালো বিতার্কিকের সংখ্যা বেশী। সেটাই আমার অহংকার।বিতর্কের জয় হোক।

জয় বাংলা।

উপলব্ধি ১

আবারো সপ্ন দেখার স্পর্ধা করতে পারলাম যখন দেখলাম অনুজপ্রতিম বিতার্কিকরা মেধা আর মননের আলোয় সৃষ্টিশীলতার প্রাচুর্যে ভরপুর। অনেকবছর পর ২৮সেপ্টেম্বর সন্ধায় মুক্তমঞ্চের হাজারো দর্শকের ভিড় আরেকবার প্রমাণ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রুচিশীল সাংস্কৃতিক চেতনা।বিতার্কিকদের অসাধারণ যুক্তির বুননে গড়া সৃজনের বার্তা শুনলাম।

অগ্রজ বিতার্কিক, সতীর্থ আর অনুজ তার্কিকদের মিলন মেলায় খুঁজে পেলাম আমার স্মৃতির ভেলায় ভাসতে থাকা ফেলে আসা বিতার্কিক সত্ত্বা। বুঝলাম, সময় বেড়ে যাচ্ছে, মহাকাল অনেক কিছুর পরিবর্তনের সাক্ষী হলেও সংগঠনের মাধ্যমে আমাদের অনাবিল ভ্রাতৃত্ব আরও বেশী সুদৃঢ় হয়েছে। দেখলাম অটুট রয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সাংগঠনিক সম্প্রীতি। আমি এই শুদ্ধ চেতনার সহচর হয়ে আজীবন দাসত্ব করতে চাই মননের, মেধার।

স্কুল কলেজের বিতার্কিকদের স্পৃহা ওদের চেতনাকে করবে পরিবর্তনের অঙ্গীকারে ক্ষুরধার। এই প্রত্যাশা।আয়োজনে ক্ষুদ্র অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ভুল থাকতে পারে তবে চেতনার বিনির্মাণে এই আয়োজনের প্রয়াস অহংকার করার মতো। তার পরেও আয়োজনের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ত্রুটিতে কেউ মনঃকষ্ট পেয়ে থাকলে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

স্বপ্ন দেখার স্পর্ধায় আমার চেতনা আজ অনির্বাণ, যুক্তি আমার শক্তি, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন আমার স্বপ্নিল চেতনার সূতিকাগার।

বিতর্কের জয় হোক, চিরঞ্জীব থাকুক জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন। জয় বাংলা।

উপলব্ধি

" তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে"...ঘৃণ্যের বিনাশ হবেই। জাগবে শুভ্র সত্য।

ঝড় যতই আসুক, বিতর্কের প্রসারে, সমৃদ্ধিতে, বিতর্ক আন্দোলনকে শৈল্পিক রূপদানে, মেধার বিনির্মাণে, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশে সব সময় যেই সংগঠনটি আমাকে আমাদেরকে প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে তা জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন। কিছু প্রতিক্রিয়াশীল দালাল যারা হয়তো কোননা কোনো ভাবে বিতর্কের সাথে যুক্ত হয়ে বিতর্ককে ভাঙ্গিয়ে খাচ্ছে তাদের নির্লজ্জ স্বার্থবাদী বীভৎসতা আর সাম্প্রদায়িক মানসিকতা আমাদের গতিকে কখনো রোধ করতে পারবে না।

আমাদের পূর্বসূরিরা যেভাবে এই অপশক্তিকে বিনাশ করেছে, আমরা যেভাবে এই কুৎসিত সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে বমন করেছি, আমাদের উত্তরসুরিরাও ওই ঘৃণ্য দালালদের বধ করবে। আমাদের যুক্তির চেতনা, সত্যাগ্রহী স্পৃহায় ধ্বংস হবে তারা যারা বিতর্ককে কাজে লাগায় মিথ্যাকে বিজয়ী করতে।

নিজেদের দোষ মিথ্যা ভাবে অন্যের ঘাড়ে দেয়ার মানসিকতা যাদের থাকে তারা সমাজের কিট। আমাদের অসাম্প্রদায়িক শক্তি আর বিতর্কের প্রেরণাই হবে কীটনাশক।

বিতর্কের জয় হোক, জয়তু জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন। জয় বাংলা।
নতুন কিছু বলবো না। তবে উপলব্ধিটা হলো বর্তমান বিতার্কিকদের পড়াশোনার মান একেবারে কমে গেছে। তাই বাকপটুতা থাকলেও বিষয় সংশ্লিষ্ট জ্ঞান অনেক কম। এটা মোটেই কাম্য নয়। ৫/৬ তা ডিবেট করলেই ৫ মিনিট অবিচ্ছিন্ন ভাবে কথা বলা যায়।তবে তাতেই একজন বিতার্কিকের পারদর্শিতার সবটুকু হয়ে যায় না। আমি জানিনা প্রতিযোগিতা বাদে কতজন বিতার্কিক তাদের রুমে বাংলা বা ইংরেজি পত্রিকা কিংবা কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স রাখেন। আপনাদের ল্যাপটপ ভিত্তিক ইন্টারনেট যুক্ত জ্ঞান অন্বেষণ বিতর্কে কতটুকু কাজে লাগছে কিংবা আপনারা কাজে লাগাচ্ছেন কিনা আমি সন্দিহান।

শুরু থেকেই বিতার্কিকদের বারোয়ারী বিতর্কের প্রতি গুরুত্ব দিতে বলেছি। অথচ আপনারা বর্তমান বিতার্কিকরা বারোয়ারীকে কেউ হয়তো বিতর্কই মনে করেন না, আবার কারো কারো একটা কথা স্টাইলের মতো হয়ে গেছে "ভাই, বারোয়ারী আমার ঠিক আসে না"। অবাক লাগে সত্যি। আর বার বার বিতর্কে আপনাদের পরাজয়গুলো হজম করতে কষ্ট হচ্ছে। ৩ বছর আগে যেই টীম আমাদের কাছে ১০০ মার্কের ব্যবধানে হারতো, আজ অনবরত তারা আপনাদের সাথে জয়লাভ করে যাচ্ছে।

আপনারা বিতার্কিক। আমার কথায় ভুল হলে মার্জনা করবেন। শুধু মাত্র ব্যাচের প্রাধান্য দিতে হবে বলে সিনিয়রদের নিয়ে টীম গঠন, নয়তো তারা সংগঠনের প্রতি রুষ্ট হবে- এই ভীতি থাকলে সংগঠন চালানোর আর কি দরকার। এতে সাংগঠনিক ভিত দুর্বল হয়ে যায়। সংগঠন হয়ে যায় ব্যাক্তিস্বার্থ কেন্দ্রিক। মাফ চাই আপনাদের কাছে। প্লিজ, কাউকে অযাচিত মূল্যায়ন করে , তোষামোদ করে সংগঠন চালানোর চেয়ে এই সংগঠন ছেঁড়ে দিন অথবা শক্ত হাতে সব হঠকারিতা দমন করেন।

তাহলে সংগঠন বাঁচবে, বিতর্ক বাঁচবে।বিতর্কের জয় হোক। জয় বাংলা।

সোমবার, ২২ জুলাই, ২০১৩

কোটা প্রথা-শোষণ-সংগ্রাম

কোটা প্রথা বাতিলের আন্দোলনটা আসলে আমাদের চিত্তের সংগ্রামী চেতনা,ইতিহাসের অনির্বাণ দৃষ্টান্ত। আসলে আমাদের ইতিহাসের সব আন্দোলনই এই কোটার বিপরীতে। হয়তো আজকের কোটাটি চাকরির অধিকার সম্বন্ধীয়, আর ১৮৫৭, ১৯০৫, ১৯২৬, ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৬২,১৯৬৯, ১৯৭১, ১৯৯০, ২০০৭ সব গুলো সংগ্রাম ছিল সুবিধাবাদীদের বিরুদ্ধে , অস্বাভাবিক বৈষম্মের বিরুদ্ধে, অধিকার প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে।

প্রশ্নটা হলো-সরকার ব্রিটিশ, পাকিস্তানী বা বাংলাদেশী যত রকমেরই হোক না কেন স্বার্থ-ক্ষমতা-শোষণ-গদি এসব কিন্তু যুগ যুগ ধরেই অভিন্ন।তাই আমাদের মতো নিপীড়িতের স্বীয় অধিকার প্রতিষ্ঠায় বার বার সংগ্রামী হয়ে ওঠাটাও ঐতিহাসিক শৌর্য। জানিনা এখন আবার আমরা সবাই কেন অনেকটা নিভে নিভে গেলাম। মিডিয়াতেও এখন আর এ বিষয় নিয়ে কোনো সারা-শব্দ নেই।

ঘুরে দাঁড়ানোটা সময়ের দাবী। যদি এখন কেউ আবার ফলাফল শিটে নিজের নাম খুঁজে পেয়ে ঐতিহাসিক মিরজাফরিও বা গোলাম আজমিও চেতনায় ভর করে আন্দোলনের প্রকৃত দাবী ভুলে গিয়ে রিটেনের প্রিপারেসনের নামে আত্মস্বার্থে নিমগ্ন হন তবে আমাদের বিবেক মুখ থুবড়ে পরবে। আমাদের চেতনার মেরুদণ্ড ভঙ্গুর হয়ে যাবে।

অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা আবশ্যক সত্যি, তবে সেটা ৫৫ঃ৪৫ নয় অথবা প্রহসনের ৫০ঃ ৫০ ও নয়। যদি পিছিয়ে পরার বিচারেই চিন্তা করতে হয় তবে তো আমাদের ১০০% কোটা থাকা উচিৎ ছিল। যুগ যুগ ধরেই আমরা পশ্চাৎপদ। কোটা সিস্টেম কখনই ৩০% এর বেশী থাকতে পারে না। বর্তমানে যারা কোটা সুবিধায় আছেন তারা অবশ্যই সেটা পাবার অধিকার রাখেন তবে
অনুপাতটা কমানো জুরুরি।

আমরা যারা বৈষম্মের পতন চাই তাদের ব্যক্তিস্বার্থ ত্যাগ করে একসুত্রে থেকে আত্ম অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের মিছিলে সমস্বরে শ্লোগান তোলা, হাতে হাত রেখে সংগ্রামী দৃষ্টিভঙ্গিতে অবিচল থাকাটা আবশ্যক।আমরা আশ্বাস দেবো ভবিষ্যতকে-
" পরশু ভোর ঠিক আসবে- সেই আশাবাদ তুমি ভুলনা"

বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০১৩

জেইউডিওঃ আমার অস্তিত্ব

একটা সংগঠনকে গড়ার চেয়ে চালিয়ে নেয়া কঠিন। স্বীয় কৃতিত্ব একারনেই দাবী করবো আমার জেইউডিও আমার হাতে গড়া না হলেও হীম, আমি, মেহেদী, সিউল, তানজিল , সুজন ভাই এই জেইউডিও কে এগিয়ে নিয়েছি সাধ্য মতো।তবে এর জন্য কোনো ফিড ব্যাক চাই নি, চাই না। এখনো আত্মপ্রত্যয় আছে বলে বলছি- আমার জেইউডিও থাকবে সেই দিন পর্যন্ত যেইদিন হয়তো আমাদের অস্থিমজ্জা মিশে যাবে মাটির মাঝে। ভালোবাসার প্রগাঢ়তা থেকে স্পর্ধা করছি এইভাবে 'নিমেষে ধ্বংস করবো তাকে যে আমার সংগঠনকে ধ্বংস করতে চাইবে'।

আমি জানি, তোমরা যারা এখন আছো তারা হয়তো আমার চেয়েও সংগঠনকে বেশী ভালোবাসো। তোমাদের ভালোবাসা না থাকলে হয়তো অনেক আগেই গতিতে মন্থরতা আসতো। কোনো অনুযোগ নয় আজ। একটা দাবী তোমাদের প্রতি- প্লিজ ফিরিয়ে আনোসেই আড্ডা, সেই সার্কেল, সেই মায়াময়তা।হোক না মুখগুলি ভিন্ন। সময়ের ঢেউয়ে হারিয়ে গেলেও তোমাদের মুখ দেখে নিজের অতীতকে হাতড়ে বেড়াতে পারবো। প্লিজ, আমার তোমরা একপ্রাণ হও। আমাদের পরিবাদের সবাই আমার প্রানোচ্ছাসে ভাসবো।

আমি জানি, আমরা পারবো। জেইউডিও আমাদের অস্তিত্বের ভিত। আমাদের পারতেই হবে। মননের তানে, ভালোবাসার টানে। আবার জমবে মেলা। জমানোর ভার তোমাদের দিলাম। আমার বিশ্বাস তোমরা পারবেই। ২৯ থেকে ৪২ সবাই এক পরিবারের বন্ধনে বাঁচবো আজীবন।

জেইউডিও দীর্ঘজীবী হোক, জয় হোক বিতর্কের। জয় বাংলা।

শনিবার, ১৫ জুন, ২০১৩

অনুভূতির নুড়িগুলো..

বিতর্ক শব্দটা শুনলেই আগে কেমন যেন ভয়ে হাত পা কেঁপে উঠত। সবার সামনে দাড়িয়ে ২ মিনিট কথা বললে যতটা নার্ভাস হয়ে ঘাম ঝরবে বলে মনে হতো, মনে হয় খ্যাতিমান কোনো কুস্তীগিরের সাথে কুস্তী করতে গেলেও এতোটা নার্ভাস হোতাম না। আজ আমি গর্বিত হয়ে উচ্চারণ করি- আমি একজন বিতারকিক। আমার কণ্ঠে যুক্তির সুর তুলেছে জেইউডিও।আমার বধির সত্ত্বাকে যুক্তির ঝংকার শুনিয়েছে জেইউডিও। আমার ম্রিয়মাণ পদদলিত স্বপ্নগুলোকে ইচ্ছের ডানায় ভর করে উদার আকাশে ওড়ার প্রেরণা দিয়েছে জেইউডিও।

মামুন ভাই, কেমন যেন বেশ অহংকারী মানুষ লাগতো জাকে। এত বেশি ভাব মারতো! ভয়ানক তুখোড় তার্কিক। কখনো ধারে কাছে ঘেঁষতে পারব কিনা দ্বিধা ছিল, তার মতো তার্কিক হওয়ার স্বপ্ন তো অনেক দূরের কথা! হুট করে কখন যেন "দেখি কতো সুখি দম্পতী হাসিমুখে বাস করে শহরের ম্যানশন গুলোয়, আর হাসি মাখা এ শহরই আমাকে ছাড়িয়ে ঘর নামিয়েছে পথের ধুলোয়" গানটি গাইতে গাইতে আমার কাঁধে হাত রেখে নিজের ভাইয়ের মতো আপন করে নিলো আমায় এই মানুষটি। মামুন ভাই, আমার আইকন। অনেক প্রশংসা শুনেছি অনেকের কাছে নিজের বিতর্ক নিয়ে। সবচেয়ে প্রেরণা পেয়েছি তখন যখন এই মানুষটি আমার বিতর্ক নিয়ে কোনো কথা বলেছেন। আমার স্পৃহার আধার মামুন ভাই।

খুব ছোটখাটো সুদরসন তবে পোংটা টাইপের একটা ছেলেকে মাঝে মাঝে দেখতাম হলে। টিটি খেলতে খেলতে এমন কিছু এক্সপ্রেশন দিত মেজাজ ব্যাপক খারাপ হতো। দেখে বোঝাই যেতনা যে এই মানুষটা নাকি আমাদের সিনিয়র।কখন যেন এই মানুষটি ক্যাম্পাসে আমার সবচেয়ে কাছের মানুষ হয়ে গেলো। আমার বিতর্কের সরাসরি শিক্ষক, বিতর্কের প্রতিটি যুক্তি, সব্দ, অক্ষর জার কাছ থেকে আমার শেখা- অপু ভাই। আমার ক্যাম্পাস লাইফের গার্জিয়ান। প্রথন যখন বাইরে বিতর্ক করতে জেতাম, এই মানুষটির কাছে হাতে কলমে প্রতিটি বিতর্কের আগের দিন ধর্না ধরতাম। আমার বিতর্কের অ আ আমি অপু ভাইয়ের কাছ থেকে শিখেছি। কতো খুনসুটি, কতো অভিমান, কতো হাসি, কতো বিরাগ, তাসের আসরে উল্লাস, কখনো বা ভয়ানক মন কষাকষি। এই নিয়ে ছিল আমার ভুবন।

প্রোগ্রাম শেশে বটতলায় খাওয়া শেশ করে গান গাইতে গাইতে যখন হলে ফিরতাম এমনি একদিনে আবিষ্কার করলাম মুস্তাফিজ ভাই( মুস্তা বন্ধু) কি জিনিস। আগে ওনাকে বেশ কনজারভেটিভ মনে করতাম। কখন যেন জেইউডিওই তার সাথে আমার আত্মিক বন্ধনটা অটুট করে দিয়েছে। সাংগঠনিক ভাবে এই মানুষটি যখন জেইউডিও এর কর্ণধার, তখনই আমি কার্যনির্বাহী কমিটিতে কাজ সুরু করি। মুস্তাফিজ ভাই, আমার সাংগঠনিক গুরু।

রাজন দা কে তার ছাত্রাবস্থায় খুব কাছে থেকে পাইনি। তবে জেইউডিও এর মাধ্যমে তার কাছ থেকে পেয়েছি অনাবিল স্নেহ, সাংগঠনিক দিকনির্দেশনা। ব্যক্তিত্বে অবিচল রাজন দা ছিলেন সত্যিকার ভাবেই অনুকরণীয়।

আদনান ভাই। কিছুটা পাগল গোছের রাগি মানুষ। অথচ ঐ রাগের মধ্যে যে কতটা প্রেরণা, স্নেহ, ভালোবাসা ছিল তা বলে বোঝাবার নয়। এক কথায় আমার কাছে মামুন ভাই আর অপু ভাইয়ের যোগফল হলেন আদনান ভাই। অনুসরনিয় বিতারকিক।অনুকরণীয় জ্ঞানের আধার।

সাইফ ভাই, যে মানুষটি আমার মতো হাজারো বিতারকিকের কাছে বিতর্কের ব্রায়ান লারা। কখনো কোনো অহমিকার লেশ মাত্র কিছু তার মধ্যে পাইনি। এরকম ভাল মানুষ এখনকার যুগে সত্যিই অনেক কম নয় প্রায় শূন্য।

হীম। আমার সভাপতি, হার হাত ধরে, জার কাঁধে কাধ মিলিয়ে ক্যাম্পাসে প্রথম বিতর্কের সাথে তথা সংগঠনের সাথে জুক্ত হওয়া। সৃষ্টিশীলতায় ভাবতে শেখা। সূর্যকে হাতের মুঠোয় ধরার স্পর্ধা। এমন অনেক দিন ছিল আমরা ২৪ ঘণ্টা একসাথে। জানি তা আজ স্রেফ অতীত। গণিতের মতো জন্মান্ধকে জ্যোৎস্নার দৃশ্য দেখাবার যুদ্ধে যার সহযোদ্ধা আমি। অনড় শ্রদ্ধায় কখনো দেবতা, নিদারুণ অভিমানে কখনোবা অপদেবতা।আমার স্মৃতির আকাশের এক অবিনশ্বর নক্ষত্র হীম।

মেহেদী। আমার শক্তি, আমার সহকর্মী, আমার সতীর্থ। যার সাথে ঝগড়াটা খুব বেশি হয়েছে, আর জাকে ফীলটাও অনেক বেশি করেছি। অভিমানে কথা বন্ধ আবার জেইউডিওকে ভালোবেসে হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাওয়া। আমার অভিমানের পেয়ালা, অনুযোগের গড়ল। আমার আধ- খাওয়া সিগারেটের পার্টনার, আমার জেইউডিও পরিবারের পিঠাপিঠি ভাই, আমার শক্তি, আমার যন্ত্রণা, আমার স্মৃতিকাতরতা মেহেদী।

আমার রুমমেট সিউল। আমার আজীবনের সিগারেটের পার্টনার। আমার দুঃখ- বেদনার জমা রাখা থলে সিউল। আমার ক্যাম্পাস জীবনের প্রথম বন্ধু, যে আমাকে সবচেয়ে বেশি জানে, আমাকে বোঝে, আমার উপলব্ধিতে যে চির অমলিন।গণিতের পাথুরে বুকে যুক্তির ফুল ফোটানো কারিগর, আমার সহযোদ্ধা সিউল।

ইরতেজা। আমার সবচেয়ে প্রিয় বিতারকিক, যার কাছে অনেক শিখেছি। যার সাথে বিতর্ক করাটা আমার বিতর্ক জীবনের সর্বাধিক ভালো লাগা, জেইউডিও এর বিতর্কের প্রাণ এই মানুষটি।
মামুন ভাই, রাজন দা, মুস্তাফিজ ভাই, অপু ভাই,বন্ধু সৈকত, সায়ের ভাই,আদনান ভাই রা জেইউডিও এর যদিও প্রতিষ্ঠাতা তবে যাদের মাধ্যমে JUDO প্রাণ পেয়েছে হীম, সিউল, মেহেদী, তাঞ্জিল, রাজীব, ইরতেজা,সুজন ভাই- এরা আমার সতীর্থ এ আমার গর্ব।

আজ বাস্তবতার ভীরে মিশে গিয়ে আমাদের বৃত্তীয় বিন্দুগুলি অনেক দূরে সরে গিয়েছে। আর কখনো ফিরে পাবনা আড্ডা মুখর, বিতর্কে ভরপুর সেই দিনগুলি। আর ফিরে আসবে না হয়তো সেই চায়ের চুমুক, সেই গান, সেই ডায়াস, সেই আধ-খাওয়া বেনসন। তবে আমার ক্ষুদ্র জীবনের প্রচ্ছদে সপ্তবর্ণে বর্ণীল থাকবে এই স্মৃতি, এই মুখগুলি।
কি জানি আবার কি জম্বে মেলা, নাকি বিরুদ্ধ সময় আমাদের আর বেশি দূরে ঠেলে দেবে!

আমার জেইউডিও আমার প্রেরণার নাম, আমার বেদনার নাম, প্রেরণা তো আছেই, সেই সাথে থাকুক না কিছু বেদনা। আমার মিল্ব সবাই। অনুজদের কাছে প্রত্যাশা- একটা আড্ডা জমিয়ে আবার একটিবারের জন্য হলেও ফিরিয়ে এনো অতীতকে।

তোমাদের অনেক মিস করি, মিস করি আমার জেইউডিওকে। ভালো থাকো জেইউডিও

বুধবার, ২২ মে, ২০১৩

মধ্যবিত্ত আমজনতার আর্তি

আমরা আজব, একমুখে বলি "জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস", আবার সেই জনগণকেই নগণ্য করি "সাধারণ জনতা" বলে। ভোট রক্তের মতো অসংখ্য জনতার এই রক্তে জন্ম নেয় এমপি, মন্ত্রীদের। অথচ আমরা জনতা হয়ে যাই আহম্মক "সাধারণ আমজনতা" আর মন্ত্রী হয়ে যায় সর্বেসর্বা। ওরা প্রায় ঈশ্বর , ধারে ভেরা দায়। ওরা রাস্তায় নামে পাজেরো চেপে, আর আমরা কোনো মতে পাবলিক বাসে চড়ি ভাড়া মেপে। আমাদের চিকিৎসা সেবা , শিক্ষা সেবা চড়া দাম দিয়ে কিনে নিতে হয়। ওরা পায় ভিভিআইপি তোষামোদি। অথচ আমাদেরই ভোটে ওরা গড়া।

আমরা হয়তো অঙ্গীকার শুনে প্রতীক্ষার প্রহর গুণে "একদিন সব মিলে যাবে" সান্ত্বনায় দিন বদলের স্বপ্ন দেখি। যে টাকা মাইনে মেলে সার্থক নাগরিক বলে বিবেচনা করে সরকার তখন ট্যাক্স কাটে। অথচ ওই মন্ত্রীর মাসিক মোবাইল খরচ আমার রক্তঘাম উপার্জনের চেয়ে ঢের বেশী। আমরা আমজনতা তাই বকেয়া হলেই নাম পরে যায় "জালিয়াত"/" খেলাপি" পাছে ওদের দেনা তেমন কিছু না।

মন্ত্রীর আবাস হয় আলিসান ঘরে অথচ এই জনতার বাড়ির ছাদ রাতে বেয়ে নেমে আসে জ্যোৎস্নার আলো। জনতা মধ্যবিত্ত নাগরিক,তবে নাগরিক কবি বলে ওই জ্যোৎস্নার আলো দিয়ে কাব্য বানাতে পারে না।বরং ভয় পায় এই অনাহুত জ্যোৎস্নার আলো যদি আগামী দিনের বর্ষার বাদল হয়। তখন তো আবার নিউমুনিয়াও অনুপ্রবেশ করবে তার বাড়িতে। তখন আবার খাবারের সাথে কম্প্রোমাইজ করে প্রাধান্য দিতে হয় ঔষধকে।

শিক্ষার কথা তো বাদই দিলাম। কয়েক দিন পরে হয়তো স্কুলগুলোর নাম হবে "অমুক স্কুল এন্ড কলেজ জুয়েলারি" । শিক্ষা হবে সোনা, তবে তা প্রজ্ঞার নয় শিক্ষা বানিজ্যের। মন্ত্রীর বদল হয়, সময় হয়তো বদলায় তবে সময়ের রূপ বদলায় না। বদলায় না ওই "আমজনতার ভাগ্য। কবে সত্যি হবে ওই গানের কথা "একদিন ঝড় থেমে যাবে- পৃথিবী আবার শান্ত হবে...জীর্ণ মতবাদ সব ইতিহাস হবে"!!!

বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৩

এতো নয় গান, এ নয় কান্না, এ যে আমার নীরব অভিমান

জীবনের মান স্রেফ যখন শুধুমাত্র গণনায় মুল্যায়িত। লাশের সংখ্যা কতো? কেউ একজন বলল ১৩০। আরেকজন বলল না,১৫০। পাশ থেকে আরেকজন বলল ওই একই কথা। ২০ টা হিসাবের হেরফের তো খুব বড় কিছু না। অবাক লাগে। মৃত্যু আমাদের দেশে সবচেয়ে সহজলভ্য প্রাপ্তি। একেকটা প্রাণের মৃত্যুর বিভীষিকা আজ আঙুলের কড়া গুনে "গভীর শোক প্রকাশ", "লজ্জিত জাতি" এসব ভ্রান্তির ছলনাময় সান্তনার বানীতে বিপন্ন।

এই মানুষটির উপার্জনে গোটা একটা পরিবারের ভবিষ্যৎ নিরভর করে, নিমেষে সে শামিল হয় মৃত্যু মিছিলে। কখনো আগুনে পুড়ে, কখনো জলে ডুবে আবার কখনোবা ভবন ধ্বসে। ঝরে যাওয়া জীবনের দাম হয়তো কখনো মেলে তথাকথিত অনুদানে। আর কতদিন! মৃত্যু অমোঘ সত্যি। তবে আমাদের দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এমন যে মৃত্যুকে আয়োজন করে নিয়ে আসা হয়। মৃত্যু তার স্বেচ্ছাচারিতায় বেঁছে নেয় হাজারো প্রাণ। বিশেষকরে শ্রেণীহীন মানুষের প্রাণের প্রতিই বেশী লোভাতুর দৃষ্টি মৃত্যুর।

স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা আমাদের দেশে অনিশ্চিত। এই দায় কার!!!কে এই নিশ্চয়তা দেবে আর কোনো তাজরিন গার্মেন্টস এ ঘটবে না অগ্নিকান্ড , ঝলসানো তৃপ্তির উন্মাদনায় মৃত্যু গ্রাস করবে না একটিও প্রাণ। আর কোনো রানা প্লাজা ধ্বসবেনা । আর কোনো তাজা প্রাণ মুহূর্তে শামিল হবে না লাশের মিছিলে।

"প্রতিটা জীবনকে বাঁচতে দিতে হবে, আর কোনো সকাল শুরু হবে না মৃত্যু-যন্ত্রণার আর্তনাদে"। এই স্বপ্ন হয়তো বিলাসিতা!

সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০১৩

বিতর্কে নোংরামি ও কিছু কথা

বিতার্কিকদের মুক্তচিন্তা আর আশাবাদী মানসিকতা বাঞ্ছনীয়।তবে সবচেয়ে মুখ্য হচ্ছে যৌক্তিকতা। "আমরা বাংলা মায়ের উদর জাত সন্তান" কথাটি যেকোনো মানুষ দ্বিধাহীন মেনে নেবে। কেউ যদি প্রশ্ন করে একজন মানুষ কিভাবে একটা দেশের উদরজাত হয়, তবে বাইওলজিকাল্লি তার কথা ১০০% সত্যি। তবে প্রজ্ঞা আর জ্ঞানের প্রশ্নে সেটা শতভাগই মূর্খতা।
একটি বিভাগীয় বিতর্ক ক্লাবকে আমাদের ঔরসজাত বলেছিলাম বলে একজন অবিতার্কিক সেটা নিয়ে উপরে বর্ণিত সংশয় তুলে ধরেছে। উল্লেখ্য তিনি ওই বিভাগীয় বিতর্ক ক্লাবটির কেউ নন। এবং বিতর্ক অঙ্গনে তার একমাত্র স্বীকৃতি একটা পোস্ট( সেটাও নাম-মাত্র)।ঔরসজাত কেন বলেছি সেটা আমার স্টেটমেন্ট এর চেয়ে ওই বিভাগীয় ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতাদের কৃতজ্ঞ স্বীকারোক্তিই বেশী গ্রহণযোগ্য। নির্দ্বিধায় তারা জেইউডিও এর অকুণ্ঠ সহযোগিতার কথা অবলীলায় মেনে নেয়।

যিনি নেতিবাচক কমেন্টটি করেছেন তার ব্যাথাটা আসলে অন্য জায়গায়।তারা নিজেদের কেন্দ্রীয় সংগঠন হিসেবে দাবি করেন( অবশ্য তাদের কাছে কেন্দ্রের অবস্থানটা মানে নয়, বয়সে)।তাছাড়া ফার্স্ট ইয়ারএর কিছু ছেলে মেয়ে যদি নতুন করে আরেকটা বিতর্কের ক্লাব খলে আর নাম দেয় জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং ক্লাব আর নিজেরা সেখানকার কিছু পোস্ট ভাগ করে নিয়ে নিজেদের কেন্দ্রীয় মানের বলে দাবি করে তবে ক্লাবের বয়স একটু বারলে সেও ওই নেতিবাচক কমেন্তকারির মতো গর্ব নিয়ে কিছু পোস্ট দিতে পারবেন। তাদের কাছে ক্লাবের বিতর্কের মান মুখ্য নয়,পোস্ট আর বয়সটাই মুখ্য।

ব্যাথার প্রশ্নে আসি। জেইউডিও এর এক সহযোগী সংগঠন কয়েকদিন আগে একটা সাফল্যমণ্ডিত কীর্তি অর্জন করেছে। বলা বাহুল্য জেইউডিও এখন আর ক্লাব পর্যায়ের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় সরাসরি অংশগ্রহণ না করে এর বিভাগীয় ও হল পর্যায়ের ক্লাবগুলো কে প্রতিযোগিতায় পাঠায়। তবে ওই নেতিবাচক ব্যথিত ব্যাক্তি যেই স্বস্বীকৃত "কেন্দ্রীয়/ প্রধান" বিতর্ক ক্লাবটির সাবেক প্রতিনিধিত্বকারী, সেই ক্লাবটিও ওই একই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করে।(অবশ্য মানের বিচারে তাদের কেন্দ্রীয়/ প্রধান সংগঠনকে আমাদের বিভাগীয়/ হল পর্যায়ের ক্লাবের সাথে তুলনা করলে আমাদেরই অসম্মান)

২/১ তা সাফল্য যেটা তাদের এসেছে, তাতে সাধুবাদ জানাই। তবে সেটাকে অহমিকার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়াটা তাদের বিষয়। কুয়োর ব্যাঙ তার আপন পরিধিকেই পৃথিবী ভাবে। তাদের তথাকথিত "কেন্দ্রীয়/ প্রধান" ক্লাবের সাফল্যের চেয়ে আমাদের সহযোগী অনেক সংগঠনেরই সাফল্য বেশী। অযাচিত স্পর্ধায় পরিশীলিত একটা সংগঠনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্য না করলে আমি কথাটা এভাবে বলতাম না।

কারণ, ওই ব্যাথিত ব্যাক্তির ক্লাবটি যখন ২/১ তা বিতর্ক শুরু করেছে, ক্যাম্পাসে বা বাইরে জেইউডিও এর বিতারকিকদের বিতর্কের মান আর সাংগঠনিক গ্রহণযোগ্যতা প্রায় সবই তারা দেখেছে। বিতার্কিক যুক্তি দিয়ে কথা বলবে, সত্যের চর্চা করবে, সাবলীল হবে সেটাই কাম্য। খালেদ হোসাইন স্যার এর একটা লাইন মনে পড়লো" কবির ব্রত আছে, তাকে বিব্রত করো না"। আমরা যুক্তির শিল্পী। আমাদের ব্রত আছে, মেধা আছে। আমাদের ব্রতকে বিব্রত করো না, আমাদের মেধা নিয়ে দ্বিধা করো না।

জেইউডিও বিতর্কের শৈল্পিক আন্দোলনের এক অন্যতম পথিকৃৎ। অসাম্প্রদায়িক চেতনার সাহসী সৈনিক।জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটির সুনাম রক্ষায় জেইউডিও নিরলস কাজ করে যাবে।বিতর্কের হঠকারী কোনো অপশক্তি আমাদের অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করতে পারবে না।

বিতর্কের জয় হোক, জয় বাংলা।

মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৩

যুক্তির স্পর্ধিত উদ্দীপনায়...


যুক্তি মানুষের এমন এক চেতনা যার শাণিত শক্তি কুসংস্কারের টুটি চেপে জাগিয়ে তোলে সভ্যতাকে। যুক্তিবাদী মানুষ সমাজকে গড়ে তুলতে পারে আপন আলোর দীপ্তিতেঅসাম্যের অভিশাপকে পরাস্ত করে সাম্যের আবির্ভাব, দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙ্গে মুক্তিকামী চেতনার বড় হাতিয়ার যুক্তি। যুক্তিবাদী জাতি নিজেদের উৎকর্ষের সুউচ্চ শিখরে প্রতিষ্ঠা করার স্পর্ধা রাখে।আজকের সমাজের অন্যায্যতা আর অনাচারের মুলে রয়েছে যুক্তিহীন মানসিকতার কদাকার রূপ। শাসক শ্রেণীর যুক্তিহীন কর্মকাণ্ড আমাদের অগ্রসরতাকে ক্রমাগত করছে বাধাগ্রস্থ । আর আমরাও তখন যুক্তিহীন মানসিকতার দাসত্ব করে চলমান বর্তমানকেই অপ্রিবরতিত বাস্তব হিসেবে মেনে নিয়ে “ এই বেশ ভালো আছি” মানসিকতায় খুঁজে নেয় মেনিমুখো জীবন। যেই জীবন যুক্তির নয় সেই জীবন দাসত্বের । যুক্তিবাদী চেতনায় গড়ে ওঠে বিপ্লবের ভ্রূণ।
যদিও বিতর্ক নামক প্রেরণাটি আজ স্রেফ লোকদেখানো আত্মদম্ভ সমেত বাচ্যিক শিল্প হিসেবে চর্চিত আর সেই সাথে আত্মস্বীকৃতি লভ্যের প্রাবল্যে কিছু যুক্তির ডায়াস কাঁপানো উদগীরণ, অথচ বিতর্ক একটি  সামাজিক আন্দোলন ও বটে।একজন বিতারকিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাকে সুন্দর করে সাজাতে,বিবদমান পঙ্কিলতা দূর করে নবপ্রভাতের আলো ফোটাতে। একের পর এক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে নিজেকে, নিজের প্রতিষ্ঠানকে সখ্যাতি আর সুনাম উপহার দেয়ার পাশাপাশি বিতর্ক আন্দোলনের চেতনাকে সমগ্র জাতিতে বিকশিত করার দায়িত্ব ও একজন তার্কিকের উপর বর্তায়। আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম এমনটির । পারিনি। কারন আমরা যারা বিতার্কিক আমাদের কেবল বাগ্মিতার বিকাশ ঘটেছে, বোধের  বিকাশ ঘটেনি। আজো আমাদের বিতর্ক আয়োজনের মহারহে নিমগ্ন। আমরা বিতর্ককে মানুষের জন্য করতে পারিনি , করেছি স্বীকৃতির জন্য, করেছি ক্যারিয়ারের জন্য।
বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতে কিছুদিন শিক্ষকতা করার সুবাদে বেশ কয়েকটি গণিত অলিম্পিয়াডে  যাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। কেন হুট করে গণিতকে টেনে  নিয়ে আসলাম প্রশ্ন জাগতে পারে। গণিত যেমন মানুষের চিন্তার বিকাশে সহায়তা করে, ঠিক তেমনি বিতর্ক ও মানুষকে ভিন্ন ভাবে ভাবতে শেখায়। চেতনায় আলোড়ন আনে। অথচ গণিত অলিম্পিয়াড আজ যেভাবে দ্বিধাহীন সারাদেশে কাজ করে যাচ্ছে, বিতর্ক সেভাবে পারছে না। কয়েকটি জাতীয় উৎসব মানেই চেতনাকে ছড়িয়ে দেয়া নয়।একটি গণিত অলিম্পিয়াড যেভাবে ক্ষুদে গণিতবিদদের স্বপ্ন দেখতে শেখাচ্ছে, আবিষ্কারের নেশায় ধাবিত করছে, চিন্তার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করছে, বিতর্ক ও এরচেয়ে কম কিছু করার নয়। অথচ আমরা তা পারছি না। গণিত অলিম্পিয়াডের আয়োজকেরা সম্মিলিত একটি প্ল্যাটফর্মে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে যেটা পারেনি আমাদের দেশের জাতীয় পর্যায়ের বিতর্ক বোদ্ধারা- রথী মহারথীরা, কর্তা ব্যাক্তিরা। “... ডি এফ” , “... ডেমোক্রেসি” আর হাজারো “জাতীয়” সংগঠনগুলোর হীন মানসিক দ্বৈরথে আমরা বিতর্ককে শুধু উৎসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করে রেখেছি। প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল কলেজগুলোতে গিয়ে বিতর্কের আলো ছড়িয়ে দেয়া, ওদের জন্য কর্মশালা আর প্রতিযোগিতার  আয়োজন করে থানা পর্যায়ে, জেলা পর্যায়ে, বিভাগীয় পর্যায়ে তথা জাতীয় পর্যায়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সবার মধ্যে বিতর্কের চেতনা ছড়িয়ে দেয়াটা কঠিন নয়। কেউ যদি বলে ওঠে যে “আমরা তা ঢের করি” তবে স্পর্ধা নিয়েই  বলব সেটা শতভাগ লৌকিক আর অসার। কারন শুধুমাত্র কয়েকটা বিতর্ক উৎসব করে শহুরে সীমাবদ্ধতা আর গা বাঁচানো দায় এড়িয়ে কয়েকটা ঢাকার বাইরের প্রতিষ্ঠান ডেকে নিয়ে প্রোগ্রাম করাটাকে তথাকথিত  জাতীয় সংগঠনগুলোর হিংসাত্মক দৌড়াত্বই বলে, বিতর্কের শৈল্পিক বিপ্লব বলেনা। এই অবস্থা থেকে বের হয়ে আমাদের উচিত বিতর্কের শাণিত প্রজ্বলনে সমগ্র জাতিকে সূচিত করা, যেটা আজ অসম্ভব মনে হলেও আমাদের মেধা, মনন আর ঐক্যের শক্তিতে তা অসম্ভব নয়।
তাই সবার প্রতি আবেদন- মানসিক দূরত্ব ঘুচিয়ে অভিন্ন প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়ান, দেখবেন- অমানিশার ঘোর কেটে গিয়ে চন্দ্রমল্লিকার তিথি জেগে উঠবে। জয় হবে বিতর্কের। আমরা স্বপ্ন দেখতে পারব একটি সমৃদ্ধ জাতির.........

শনিবার, ২ মার্চ, ২০১৩

বিচারিক হঠকারিতার অবসান হোক

জেইউডিও...আমার প্রেরণার নাম, আমার চেতনার নাম, আমার দ্রোহের নাম, আমার মেধার নাম, আমার অভিমানের নাম।কোন একজন সাবেক বিতারকিকের একটা স্ট্যাটাস দেখলাম যিনি বলেছেন ". দিনশেষে আমরা ফলাফল নিয়ে খুশি কেন হতে পারছি না? কেন এখনও পরাজিত দল মানতে পারেনা ফলাফল? " খুব সহজে কথাগুলো টাইপ করে স্ট্যাটাসে দেয়া যায়। পরাজিতদের 'উঁহু' বা 'আহা' করে সান্ত্বনা দেয়া যায়। নিজের অবিচল বিচারিক দায়িত্ব জ্ঞান নিয়ে স্পর্ধিত সস্বীকৃত বুলি ছাড়া যায়। বিতর্ক অঙ্গনের নোংরা রাজনীতি থেকে হাত ধুয়ে ফেলা যায় না। 

জেইউডিও তার বিতর্ক নিয়ে অবশ্যই স্পর্ধা করতে পারে কারণ তার সেই মেধা তার শিখরস্পর্শী। তবে আমরা হারলে হার মেনে নিতে পারি। এমন অনেক বছর গিয়েছে যখন সাইফ, আদনান, অপু, স্মৃতি, ইরতেজা, কৌশিক, নুসরাত, আরাফাতরা অনেকদিন অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে হেরেছে, হার মেনে নিয়েছে, মেনিপুলেটেড ভেন্যুতে বিতর্ক করেছে। তাদের সাফল্যের ঝুড়িতে ক্রেস্ট হয়তো বেশী নেই, কখনো ০.৫ আর ১/১ ব্যালট, কখনো বিতর্কের মানে, কখনো জাজদের আচরণে, স্বজনপ্রীতিতে। তখন জেইউডিও অন্য সবার মতো ভারে কাটত না ধারে কাটত। আর আমাদের ওই অপ্রাপ্তিগুলো , বিভিন্ন জাজদের স্বজনপ্রীতি আর নিচু মানসিকতার হিংস্রতাগুলো জাগরণী শক্তি হয়েছে উত্তরসূরিদের কাছে।

সৈকত, জাফর, রেহনুমা, ফিবা, শুভ, তায়্যেবরা শুধু জাহাঙ্গীরনগরের না, সমগ্র দেশের গর্ব।বিভিন্ন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ওরা ওদেরকে প্রমাণ করেছে।JUDO পরাজয় মেনে নিতে পারে, নতুন করে স্পৃহায় উজ্জীবিত হতে পারে, শুধু তথাকথিত বিচারকদের অবিচারিক হঠকারিতা মেনে নিতে পারে না। আমি সব বিচারকের কথা বলছি না।অনেকের বিতর্কের প্রেরনা আর ব্যক্তিত্ব আমাদের আদর্শ। তবে কেউ কেউ আছেন, যারা বিতর্ক করেছেন ঠিকই, তবে আচরণে চেতনাদিপ্ত বিতারকিক না হয়ে আদর্শ বিশ্বস্ত চাটুকার হয়েছেন। তাই তো বিতর্কের মান বিচার করে ফলাফল মুল্যায়ন না করে ব্যাখ্যা ছাড়া মুখ দেখে ক্ষমতাবানদের আনুকূল্য পাওয়ার অভীপ্সায় বিতর্কের ফলাফল দেন।
হাত জোর করি। মানসিকতার পরিবর্তন করুন। দেখবেন বিতর্কের জয় হবে। কেবল স্ট্যাটাস দেয়ার পর লোকদেখানো “ বিতর্কের জয় হোক” না লিখে এটাকে বুকে ধারণ করেন।JUDO হয়তো হারতে জানে, তবে বিতর্কের মান অবশ্যই এই সাক্ষ্য দেবে যে, অফুরন্ত সাফল্যের নুড়িগুলো JUDOএর আগমনী দিনের পথে ছড়িয়ে আছে।
বিতর্কের জয় হোক, জয় বাংলা।