বুধবার, ২২ মে, ২০১৩

মধ্যবিত্ত আমজনতার আর্তি

আমরা আজব, একমুখে বলি "জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস", আবার সেই জনগণকেই নগণ্য করি "সাধারণ জনতা" বলে। ভোট রক্তের মতো অসংখ্য জনতার এই রক্তে জন্ম নেয় এমপি, মন্ত্রীদের। অথচ আমরা জনতা হয়ে যাই আহম্মক "সাধারণ আমজনতা" আর মন্ত্রী হয়ে যায় সর্বেসর্বা। ওরা প্রায় ঈশ্বর , ধারে ভেরা দায়। ওরা রাস্তায় নামে পাজেরো চেপে, আর আমরা কোনো মতে পাবলিক বাসে চড়ি ভাড়া মেপে। আমাদের চিকিৎসা সেবা , শিক্ষা সেবা চড়া দাম দিয়ে কিনে নিতে হয়। ওরা পায় ভিভিআইপি তোষামোদি। অথচ আমাদেরই ভোটে ওরা গড়া।

আমরা হয়তো অঙ্গীকার শুনে প্রতীক্ষার প্রহর গুণে "একদিন সব মিলে যাবে" সান্ত্বনায় দিন বদলের স্বপ্ন দেখি। যে টাকা মাইনে মেলে সার্থক নাগরিক বলে বিবেচনা করে সরকার তখন ট্যাক্স কাটে। অথচ ওই মন্ত্রীর মাসিক মোবাইল খরচ আমার রক্তঘাম উপার্জনের চেয়ে ঢের বেশী। আমরা আমজনতা তাই বকেয়া হলেই নাম পরে যায় "জালিয়াত"/" খেলাপি" পাছে ওদের দেনা তেমন কিছু না।

মন্ত্রীর আবাস হয় আলিসান ঘরে অথচ এই জনতার বাড়ির ছাদ রাতে বেয়ে নেমে আসে জ্যোৎস্নার আলো। জনতা মধ্যবিত্ত নাগরিক,তবে নাগরিক কবি বলে ওই জ্যোৎস্নার আলো দিয়ে কাব্য বানাতে পারে না।বরং ভয় পায় এই অনাহুত জ্যোৎস্নার আলো যদি আগামী দিনের বর্ষার বাদল হয়। তখন তো আবার নিউমুনিয়াও অনুপ্রবেশ করবে তার বাড়িতে। তখন আবার খাবারের সাথে কম্প্রোমাইজ করে প্রাধান্য দিতে হয় ঔষধকে।

শিক্ষার কথা তো বাদই দিলাম। কয়েক দিন পরে হয়তো স্কুলগুলোর নাম হবে "অমুক স্কুল এন্ড কলেজ জুয়েলারি" । শিক্ষা হবে সোনা, তবে তা প্রজ্ঞার নয় শিক্ষা বানিজ্যের। মন্ত্রীর বদল হয়, সময় হয়তো বদলায় তবে সময়ের রূপ বদলায় না। বদলায় না ওই "আমজনতার ভাগ্য। কবে সত্যি হবে ওই গানের কথা "একদিন ঝড় থেমে যাবে- পৃথিবী আবার শান্ত হবে...জীর্ণ মতবাদ সব ইতিহাস হবে"!!!