সোমবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৩

উপলব্ধি ৩

আমার জেইউডিও এর আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ট্রফির সংখ্যা গতকালের অর্জনের পর ৩০ হলো।যা হয়তো সাংখ্যিক মানে অন্যদের "২০০" বা "২৫০" থেকে অনেক কম। তবে গর্ব হয় এইভেবে যে, আমার জেইউডিও তে বিতর্কের শুদ্ধতার পাশাপাশি বিতারকিক সৃষ্টির ধারাবাহিকতা রয়েছে। আমার জেইউডিও তে যারা বিতর্ক করেছে, করে কিংবা করবে তারা প্রত্যেকেই ব্যাকরণ মেনে বিতর্ক করার চেষ্টা করে। আমার জেইউডিও এর মনন আমার শুধু অহংকারই নয় আমার স্পর্ধাও ।

হয়তো এ বছর আমাদের অর্জিত ট্রফির সংখ্যা মাত্র ২ যা গতবছর ৮ কিংবা তার আগের বছর ১০ ছিল। যেখানে অনেক বিতর্ক সংগঠনই এ বছর আমাদের চেয়ে বেশী ট্রফি অর্জন করেছে। আমাদের অহমিকার সবচেয়ে বড় জায়গা হচ্ছে আমরা রেডিমেট বিতার্কিকে বিশ্বাসী নই। আমাদের সফল বিতার্কিকরা সবাই রেডিমেট হোক আর না হোক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্ক প্র্যাকটিস করে, বিতর্ক শিখে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। আমরা সৃষ্টিতে বিশ্বাসী। তাই আমাদের বিশ্বাস প্র্যাকটিস ছাড়া , নতুন বিতার্কিক সৃষ্টির বদলে যারা রেডিমেট বিতারকিকদের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পাঠিয়ে অর্জিত সাফল্যকে গর্ব মনে করে, জেইউডিও তাদের বিরুদ্ধে। কারণ,জেইউডিও নতুন বিতার্কিক সৃষ্টিতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

এতে যদি আমাদের সাফল্যের পাল্লায় কিছু ট্রফি কমও আসে ক্ষতি নেই। আমার জেইউডিওতে ট্রফির চেয়ে ভালো বিতার্কিকের সংখ্যা বেশী। সেটাই আমার অহংকার।বিতর্কের জয় হোক।

জয় বাংলা।

উপলব্ধি ১

আবারো সপ্ন দেখার স্পর্ধা করতে পারলাম যখন দেখলাম অনুজপ্রতিম বিতার্কিকরা মেধা আর মননের আলোয় সৃষ্টিশীলতার প্রাচুর্যে ভরপুর। অনেকবছর পর ২৮সেপ্টেম্বর সন্ধায় মুক্তমঞ্চের হাজারো দর্শকের ভিড় আরেকবার প্রমাণ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রুচিশীল সাংস্কৃতিক চেতনা।বিতার্কিকদের অসাধারণ যুক্তির বুননে গড়া সৃজনের বার্তা শুনলাম।

অগ্রজ বিতার্কিক, সতীর্থ আর অনুজ তার্কিকদের মিলন মেলায় খুঁজে পেলাম আমার স্মৃতির ভেলায় ভাসতে থাকা ফেলে আসা বিতার্কিক সত্ত্বা। বুঝলাম, সময় বেড়ে যাচ্ছে, মহাকাল অনেক কিছুর পরিবর্তনের সাক্ষী হলেও সংগঠনের মাধ্যমে আমাদের অনাবিল ভ্রাতৃত্ব আরও বেশী সুদৃঢ় হয়েছে। দেখলাম অটুট রয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সাংগঠনিক সম্প্রীতি। আমি এই শুদ্ধ চেতনার সহচর হয়ে আজীবন দাসত্ব করতে চাই মননের, মেধার।

স্কুল কলেজের বিতার্কিকদের স্পৃহা ওদের চেতনাকে করবে পরিবর্তনের অঙ্গীকারে ক্ষুরধার। এই প্রত্যাশা।আয়োজনে ক্ষুদ্র অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ভুল থাকতে পারে তবে চেতনার বিনির্মাণে এই আয়োজনের প্রয়াস অহংকার করার মতো। তার পরেও আয়োজনের কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ত্রুটিতে কেউ মনঃকষ্ট পেয়ে থাকলে দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

স্বপ্ন দেখার স্পর্ধায় আমার চেতনা আজ অনির্বাণ, যুক্তি আমার শক্তি, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন আমার স্বপ্নিল চেতনার সূতিকাগার।

বিতর্কের জয় হোক, চিরঞ্জীব থাকুক জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন। জয় বাংলা।

উপলব্ধি

" তোমারে বধিবে যে, গোকুলে বাড়িছে সে"...ঘৃণ্যের বিনাশ হবেই। জাগবে শুভ্র সত্য।

ঝড় যতই আসুক, বিতর্কের প্রসারে, সমৃদ্ধিতে, বিতর্ক আন্দোলনকে শৈল্পিক রূপদানে, মেধার বিনির্মাণে, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশে সব সময় যেই সংগঠনটি আমাকে আমাদেরকে প্রেরণা দিয়েছে, শক্তি দিয়েছে তা জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন। কিছু প্রতিক্রিয়াশীল দালাল যারা হয়তো কোননা কোনো ভাবে বিতর্কের সাথে যুক্ত হয়ে বিতর্ককে ভাঙ্গিয়ে খাচ্ছে তাদের নির্লজ্জ স্বার্থবাদী বীভৎসতা আর সাম্প্রদায়িক মানসিকতা আমাদের গতিকে কখনো রোধ করতে পারবে না।

আমাদের পূর্বসূরিরা যেভাবে এই অপশক্তিকে বিনাশ করেছে, আমরা যেভাবে এই কুৎসিত সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে বমন করেছি, আমাদের উত্তরসুরিরাও ওই ঘৃণ্য দালালদের বধ করবে। আমাদের যুক্তির চেতনা, সত্যাগ্রহী স্পৃহায় ধ্বংস হবে তারা যারা বিতর্ককে কাজে লাগায় মিথ্যাকে বিজয়ী করতে।

নিজেদের দোষ মিথ্যা ভাবে অন্যের ঘাড়ে দেয়ার মানসিকতা যাদের থাকে তারা সমাজের কিট। আমাদের অসাম্প্রদায়িক শক্তি আর বিতর্কের প্রেরণাই হবে কীটনাশক।

বিতর্কের জয় হোক, জয়তু জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন। জয় বাংলা।
নতুন কিছু বলবো না। তবে উপলব্ধিটা হলো বর্তমান বিতার্কিকদের পড়াশোনার মান একেবারে কমে গেছে। তাই বাকপটুতা থাকলেও বিষয় সংশ্লিষ্ট জ্ঞান অনেক কম। এটা মোটেই কাম্য নয়। ৫/৬ তা ডিবেট করলেই ৫ মিনিট অবিচ্ছিন্ন ভাবে কথা বলা যায়।তবে তাতেই একজন বিতার্কিকের পারদর্শিতার সবটুকু হয়ে যায় না। আমি জানিনা প্রতিযোগিতা বাদে কতজন বিতার্কিক তাদের রুমে বাংলা বা ইংরেজি পত্রিকা কিংবা কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স রাখেন। আপনাদের ল্যাপটপ ভিত্তিক ইন্টারনেট যুক্ত জ্ঞান অন্বেষণ বিতর্কে কতটুকু কাজে লাগছে কিংবা আপনারা কাজে লাগাচ্ছেন কিনা আমি সন্দিহান।

শুরু থেকেই বিতার্কিকদের বারোয়ারী বিতর্কের প্রতি গুরুত্ব দিতে বলেছি। অথচ আপনারা বর্তমান বিতার্কিকরা বারোয়ারীকে কেউ হয়তো বিতর্কই মনে করেন না, আবার কারো কারো একটা কথা স্টাইলের মতো হয়ে গেছে "ভাই, বারোয়ারী আমার ঠিক আসে না"। অবাক লাগে সত্যি। আর বার বার বিতর্কে আপনাদের পরাজয়গুলো হজম করতে কষ্ট হচ্ছে। ৩ বছর আগে যেই টীম আমাদের কাছে ১০০ মার্কের ব্যবধানে হারতো, আজ অনবরত তারা আপনাদের সাথে জয়লাভ করে যাচ্ছে।

আপনারা বিতার্কিক। আমার কথায় ভুল হলে মার্জনা করবেন। শুধু মাত্র ব্যাচের প্রাধান্য দিতে হবে বলে সিনিয়রদের নিয়ে টীম গঠন, নয়তো তারা সংগঠনের প্রতি রুষ্ট হবে- এই ভীতি থাকলে সংগঠন চালানোর আর কি দরকার। এতে সাংগঠনিক ভিত দুর্বল হয়ে যায়। সংগঠন হয়ে যায় ব্যাক্তিস্বার্থ কেন্দ্রিক। মাফ চাই আপনাদের কাছে। প্লিজ, কাউকে অযাচিত মূল্যায়ন করে , তোষামোদ করে সংগঠন চালানোর চেয়ে এই সংগঠন ছেঁড়ে দিন অথবা শক্ত হাতে সব হঠকারিতা দমন করেন।

তাহলে সংগঠন বাঁচবে, বিতর্ক বাঁচবে।বিতর্কের জয় হোক। জয় বাংলা।